বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

নাসার ইতিহাস সৃষ্টি : সূর্যের কাছাকাছি গিয়ে সাড়া দিয়েছে মহাকাশযান

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৬৮ সময় দেখুন

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ২৯ ডিসেম্বের ২০২৪ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট):  নাসা সম্প্রতি তাদের পাঠানো ‘পার্কার সোলার প্রোব’ নামক মহাকাশযানটি সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছানোর ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এটি সূর্যের বাইরে আবহমণ্ডলে প্রবেশের পর কয়েক দিন যোগাযোগহীন থাকার পর শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে একটি সংকেত পাঠায়।

 

যা ছিল নাসার বিজ্ঞানীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ সূর্যের কাছে থাকাকালীন মহাকাশযানটি ভয়াবহ তাপমাত্রা এবং বিকিরণের মধ্যে পড়েছিল। খবর বিবিসি।

 

নাসা জানায়, পার্কার সোলার প্রোব এখন নিরাপদে রয়েছে এবং সঠিকভাবে কাজ করছে। এটি পৃথিবী থেকে সূর্য পর্যন্ত ৯৩ মিলিয়ন মাইল (১২০ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে, কিন্তু মহাকাশযানটি সূর্য থেকে মাত্র ৩৮ লাখ মাইল (৬১ লাখ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করেছিল।

 

পার্থক্যটা বোঝাতে গিয়ে, নাসার বিজ্ঞানী নিকোলা ফক্স বলেছেন, আমরা যদি সূর্য এবং পৃথিবীকে এক মিটার দূরত্বে রাখি, তবে পার্কার সোলার প্রোব হবে মাত্র ৪ সেন্টিমিটার দূরে। এই বিপজ্জনক পথ অতিক্রম করার সময়, পার্কার সোলার প্রোবকে প্রায় ৯৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং তীব্র সৌর বিকিরণের মধ্যে পড়তে হয়েছে।

 

তবে, মহাকাশযানটির সুরক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এটি এসব কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করতে সক্ষম।

 

পার্কার সোলার প্রোব ২০১৮ সালে সূর্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল এবং এটি ২১ বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে। এখন, সূর্যের খুব কাছাকাছি যাওয়ার পর এই মহাকাশযানটি সূর্যের কার্যপ্রণালি সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে, যার মধ্যে রয়েছে সূর্যের করোনার উষ্ণতার রহস্য উদ্ঘাটন করা।

 

সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৬ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে সূর্যের করোনার তাপমাত্রা লাখ লাখ ডিগ্রি এবং বিজ্ঞানীরা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি কেন এমনটি হচ্ছে।

 

এই মিশনের লক্ষ্য ছিল সূর্যের কার্যকলাপ এবং সৌর বায়ুর গঠন এবং প্রভাব সম্পর্কে আরও বেশি জানাশোনা পাওয়া। সৌর বায়ু পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্রের সঙ্গে মিলে মেরুপ্রভা (অরোরা) সৃষ্টি করে, তবে এটি পৃথিবীতে বিপদও সৃষ্টি করতে পারে। যেমন, সৌর বায়ু বিদ্যুৎ গ্রিডে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বা যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ক্ষতি করতে পারে।

 

নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পার্কার সোলার প্রোব এমন একটি শক্তিশালী মহাকাশযান, যা সূর্যের কাছাকাছি গিয়ে আরও নতুন তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে আমরা সূর্য সম্পর্কে আরও জানতে পারব, যা আমাদের পৃথিবীতে জীবন যাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

 

এই মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে পাঠানো সূর্যৈর সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছানো মহাকাশযান এবং এর সফলতা শুধু নাসার জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্য এক বড় অর্জন। এটি সূর্যের কার্যপ্রণালি সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রদান করবে, যা পৃথিবীতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর