বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তীব্র বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন। নেপালে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৮ জন। ভারতের বিহারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১২ ছাড়িয়েছে। আসামে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ লাখ মানুষ। দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও বন্যা দেখা দিয়েছে। এদিকে, চীনে অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।
তীব্র গরমের পর এবার ভারতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দিয়েছে বন্যা। বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনাসহ বিভিন্ন স্থানে গত পাঁচদিনে প্রবল বর্ষণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটেছে প্রাণহানি। বহু মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে নিরাপদস্থানে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। বন্ধ হয়ে গেছে অনেকস্থানের সড়ক যোগাযোগ।
উত্তরপ্রদেশে বিপদসীমার ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে গঙ্গা নদীর পানি। এতে তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি অঞ্চল। আরেক রাজ্য আসামের ৩৩টি জেলার ২৫টিতেই দেখা দিয়েছে বন্যা। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ লাখের বেশি মানুষ। আগামী কয়েকদিনে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ দিতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। ইতোমধ্যে সেখানে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। ত্রাণ সহায়তার কাজ করছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী। ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় রাজধানী গুয়াহাটিও তলিয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ।
এছাড়া বাংলাদেশ সংলগ্ন আরেক রাজ্য মিজোরামেও বন্যা দেখা দিয়েছে। ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট। এদিকে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় নেপালের ৭৭টি জেলার মধ্যে ২০ জেলা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি এলাকায় সৃষ্ট ভূমিধসে হতাহতের পাশাপাশি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তাদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভুটানেও বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাকিস্তানেও বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় জারি রয়েছে বন্যা সতর্কতা। চীনের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা কবলিত অঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ না হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply