ঢাকা, ০৫ মে ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ সোমবার (৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিকাব) ‘ডিক্যাব টকে’ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারের বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কখন হবে, সেটি বাংলাদেশের বিষয়। নির্বাচনের দিন-ক্ষণ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই। তবে নির্বাচনের আগে সংস্কারগুলো সম্পন্ন করা দরকার।
দেশের রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে বলে ইউ আশা করে।
রাজনৈতিক রূপান্তর বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, ‘ইইউ মনে করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক রূপান্তর বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে এবং আমরা নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো চাপ দিচ্ছি না। আমরা মনে করি, সংস্কার কাজের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে। এর জন্য ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিটি কাজ করছে। দেখা যাক, কতটুকু ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।’
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের রিপোর্টকে ইউ সমর্থন করে বলে জানান মাইকেল মিলার। বলেন, ‘তাদের রিপোর্ট অত্যন্ত পরিষ্কার। এখন পরবর্তী কাজ হলো যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা। তবে সেটি যেন অত্যন্ত স্বচ্ছতার মাধ্যমে হয়।’
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কার এখন বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। এই রূপান্তরের সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। একই সঙ্গে তারা তাদের সমর্থন বাড়াতে চাইছে।’
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ই্ইউ কীভাবে কাজ করতে পারে, সেটি চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছেন বলে জানান মাইকেল মিলার। সামনের নির্বাচন রাজনৈতিক রূপান্তরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।’ এই নির্বাচনে ইইউ সহায়তা দিতে আগ্রহী বলে জানান তিনি। তবে নির্বাচন কবে হবে, তা ঠিক করবে বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশ থেকে ইইউর বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ইইউতে পাচার হওয়া অর্থ যদি বর্তমান সরকার ফেরত আনতে চায়, তবে এ নিয়ে রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যথাযথ তথ্যহ–উপাত্ত নিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। সদস্য দেশগুলোর বিচার বিভাগকে প্রমাণাদি দিতে হবে অপরাধ সম্পর্কে এবং তারা সেগুলো বিবেচনা করবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা ও মানবিক করিডোর নিয়েও কথা বলেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। রোহিঙ্গারা রাখাইনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, এবং ইইউ একটি রাজনৈতিক সমাধান চায় বলে জানান মাইকেল মিলার। এখন পর্য,ন্ত ইইউর সহায়তার পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সহায়তার পরিমাণ কমে আসছে। এজন্য আমরা রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করতে চাইছি।’
মানবিক করিডোরের বিষয়ে মিলার বলেন, ‘উদ্বাস্তুরা যে দেশেই থাকুক না কেন, আমরা তাদের সহায়তা করতে পারলে খুশি হব। যদি সীমান্তের ওপারে থাকে, তবে তাদের সহায়তা করার জন্য আমাদের একটি চ্যানেল লাগবে।’
বাংলাদেশে ইইউর বিনিয়োগ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা চাই, বাংলোদেশ তার অর্থনীতি উন্মুক্ত করুক, যাতে ইউরোপের কোম্পানিগুলো এখানে ব্যবসা করতে পারে।’ পানি, ডিজিটাল, পরিবহন, জ্বালানি, অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতে ইউরোপের কোম্পানিগুলো আগ্রহী বলে জানান মিলার।
ডিকাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।
Leave a Reply