স্পোর্টস ডেস্ক, ০১ মে ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): চট্টগ্রামে ইনিংস ব্যবধানে জিতে সিরিজে সমতা—দেখতে যতটা দারুণ, বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত কিন্তু সন্তুষ্ট নন। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুখে হাসি ছিল, তবে কণ্ঠে ছিল আত্মসমালোচনার সুর। তার কথায় পরিষ্কার, একটি ম্যাচ জিতে সব ভুল ধুয়ে যায় না। বরং এই জয়টাই মনে করিয়ে দিচ্ছে, পুরো সিরিজটাই জেতা সম্ভব ছিল।
‘আমি আসলে খুব বেশি খুশি না,’ সরাসরি বললেন শান্ত। ‘এই সিরিজটা আমাদের জেতা উচিত ছিল। আমরা প্রথম ম্যাচে একদমই ভালো খেলিনি। কামব্যাকটা হয়েছে, কিন্তু প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে যাওয়া যাবে না।’
তবে হতাশার ভেতরেও শান্তর চোখে ছিল কিছু প্রাপ্তির ঝলক। বিশেষভাবে প্রশংসা করলেন ওপেনার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়ের, যারা অনেকদিন পর জাতীয় দলে ফিরে দলকে ভালো শুরু এনে দেন। তাইজুল ইসলামের স্পিন জাদু এবং প্রথম ইনিংসে তানজিম সাকিবের দায়িত্বশীল ব্যাটিং নিয়েও উচ্ছ্বাস ঝরেছে অধিনায়কের কণ্ঠে।
‘সাকিবের ব্যাটিংটা আজকে অনেক ভালো লেগেছে,’ বললেন শান্ত। ‘তাইজুল ভাই অতীতে অনেক বল ফেস করেছেন, এবারও দেখিয়েছেন ব্যাট হাতে অবদান রাখা যায়। আর স্পিন কোচ সোহেল স্যারের অবদান অনেক।’
মিরাজের পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশংসা করেছেন শান্ত। তবে তাকে আরও ওপরে ব্যাট করানো নিয়ে প্রশ্ন উঠলে শান্ত বলেন, ‘ওর বোলিংই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ৪-৫ নম্বরে খেলাটা চ্যালেঞ্জিং, তাই ৬-৭ এ যেভাবে খেলছে, সেটাই দলের জন্য সেরা।’
শেষ দিকে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং ও স্পিনারদের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সেও তৃপ্ত শান্ত, কিন্তু ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে রয়ে গেছে হতাশা। ‘স্কোরবোর্ডে সবাই যদি ৪০-৪০ করে আর কেউ ১০০ না করে, সেটা দলের জন্য ভালো না। মুশফিক ভাই বা আমি রান করিনি, সেটার চেয়ে বড় বিষয় হলো কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। ভবিষ্যতে চাইবো কেউ যেন ১৫০ বা ২০০ করে।’
সিরিজের পরই সামনে শ্রীলঙ্কা সফর। শান্তর চোখ এখন সেখানেই। ‘শ্রীলঙ্কায় উইকেট ভালো থাকে। চাইবো টপ অর্ডার বড় ইনিংস খেলুক। লম্বা ইনিংস খেলতে হবে, শুধু ৪০-৫০ নয়।’
জয়ের পরও শান্তর কণ্ঠে এই আত্মসমালোচনা হয়তো প্রমাণ করে, বাংলাদেশ টেস্ট দল শুধু জিততেই চায় না—ধীরে ধীরে গড়তে চাইছে এক ‘মান’ যার সঙ্গে মিলবে ধারাবাহিকতা, দৃঢ়তা আর গভীরতা।
Leave a Reply