বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত এখন উভয় সংকটে পড়েছে

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭৬ সময় দেখুন

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ২৭ ডিসেম্বের ২০২৪ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট):  ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মধ্যে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক চিঠি প্রাপ্তি স্বীকার করেও এর বেশি কোনো মন্তব্য করেনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

 

তবে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার ফলে নয়াদিল্লি নতুন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যা তাদের জন্য বেশ জটিল হয়ে উঠেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

 

ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টেটসম্যান বলেছে, শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়টি কেবল আইনি বাধ্যবাধকাতেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি রাজনৈতিক কৌশলেরও ব্যাপার। আবার এ বিষয়টি দুদেশের সম্পর্ক এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে একটি ভুল সিদ্ধান্তে অনেক কিছু হতে পারে।

 

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত এখন উভয় সংকটে পড়েছে। কারণ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করা হলে সমালোচকরা বলবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লি সম্পর্ক গড়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনার প্রতি যারা অনুগত তাদের পর করে দিয়েছে এমন সমালোচনাও তৈরি হতে পারে।

 

অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না পাঠালে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। এর ফলে বাণিজ্য, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

 

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে দেশটিতেই অবস্থান করছেন তিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে শতাধিক হত্যা মামলা হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে।

 

দ্য স্টেটসম্যান বলছে, শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিরোধী দলগুলো সরকারের রাজনৈতিক প্রাধান্য এবং স্পর্শকাতর বৈদেশিক নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

 

এছাড়া শেখ হাসিনার ফেরতের বিষয়টি আঞ্চলিক পরাশক্তি ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভূচিত্রের বিষয়ে ভারত বড় পরীক্ষার মুখে পড়বে।

 

দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটি ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত হবে। ভবিষ্যতে ভারত এ ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়লে কী করতে পারে সেটিও এই সিদ্ধান্ত থেকে পরিষ্কার হবে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত এখন শেখ হাসিনার মতো পুরোনো বন্ধুকে ফেরত দেবে কি না সেটিই মোটা দাগে দেখার বিষয়। তবে এই মুহূর্তে ভারত শেখ হাসিনার ফেরতের বিষয়ে মুখ খুলছে না। নয়াদিল্লি নীরব কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারে। কোনো উত্তেজনা তৈরি না করে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান করাই দিল্লির লক্ষ্য। এমনটাই বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর