ঢাকা, ০৬ মে ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আরশাদুর রউফ।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল দুপুর ২টার দিকে বিচারপতি মো. আতাউর রহমান ও বিচারপতি মো. আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মঞ্জুর করেন। তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
পরে একইদিন বিকালে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হেলাল আমীন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে জামিন স্থগিতের আবেদন করেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিন্ময় দাসকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। তবে এর কিছুক্ষণ পরই জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করেন চেম্বার আদালত এবং এ বিষয়ে পুনরায় শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছিলেন, চেম্বার বিচারপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনবেন। তারপর আদেশ দেবেন।
এরআগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পতাকা অবমাননার মামলায় জামিন চেয়ে চিন্ময় দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছিল হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে মহাসমাবেশ করে। ওই সমাবেশে চট্টগ্রামসহ আশপাশের জেলা থেকে হাজারো মানুষ যোগ দেন। ওইদিন নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করা হয়। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ওই ঘটনায় ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত) বাদী হয়ে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরদিন ২৬ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম।
এদিকে আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, আহত হন আরও অন্তত ২০ জন। এরপর থেকে কারাগারে রয়েছেন চিন্ময়।
গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময় দাস।
Leave a Reply