ক্যাম্পাস প্রতিনিধি-বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)—যেখানে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আড্ডা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে প্রাণবন্ত থাকার কথা—সেটিই এখন নীরবতা ও সীমাবদ্ধতার প্রতীক।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই কেন্দ্র প্রায়ই তালাবদ্ধ থাকে। এমনকি নিয়মিত দিনগুলোতেও প্রাণচাঞ্চল্যের পরিবর্তে খোলার সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করে, ফলে শিক্ষার্থীরা চাইলেও এখানে বসে আড্ডা বা সাংস্কৃতিক আয়োজন করতে পারেন না। টিএসসির ক্যাফেটেরিয়াও অধিকাংশ সময় থাকে বন্ধ।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রনি খান বলেন, “বাংলাদেশের প্রায় সব বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হচ্ছে সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনভিত্তিক কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে টিএসসি প্রাঙ্গণ শিক্ষার্থীদের আড্ডা, শিল্পচর্চা, রাজনৈতিক সচেতনতা ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। একাডেমিক চাপ থেকে মানসিক প্রশান্তির বড় মাধ্যম এটি। কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বন্ধ থাকে, অনেক সময় তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে।”
শিক্ষার্থীদের দাবি, বর্তমানে ববিতে ৩৫টিরও বেশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, কিন্তু টিএসসিতে মাত্র কয়েকটি সংগঠন অফিস স্পেস পেয়েছে। এতে মুক্ত বুদ্ধি ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্র সীমিত হয়ে পড়ছে। একই সঙ্গে তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দকৃত একটি রুম ব্যবহার না হয়েও পড়ে আছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যেত।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি মেহেদী আরেফিন বলেন, “টিএসসির একটি ফ্লোর শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন টিএসসির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে এবং শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমের জন্য আরও রুম বরাদ্দ দেয়, সেটাই আমাদের দাবি। এতে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সমৃদ্ধ হবে।”
টিএসসির পরিচালক মো. তারিকুল হক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, “প্রথমত জায়গা সংকটের কারণে আমরা সবার জন্য রুম বরাদ্দ দিতে পারছি না। অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হলে স্পেসের সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি। বন্ধের দিনে টিএসসি খোলা রাখতে না পারার কারণ স্টাফ সংকট। তবে নতুন স্টাফ নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব। আর টিচার্স স্টুডেন্ট সেন্টারে শিক্ষকদের জন্য একটি রুম বরাদ্দ থাকাটা নিয়মবহির্ভূত নয়।”
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, টিএসসির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হলে একাডেমিক চাপ থেকে মুক্তি নিয়ে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে তারা। এতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ আরও প্রাণবন্ত হবে বলে তাদের প্রত্যাশা।
Leave a Reply