মালিতে তিন বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় সেনাবাহিনী। তারপর তারা ক্ষমতার হস্তান্তর করবে। পশ্চিম আফ্রিকা রিজিওনাল ব্লকের সঙ্গে আলোচনার পর এই প্রস্তাব দিয়েছে সেনাশাসকরা।
গত মঙ্গলবার রক্তপাতহীন বিদ্রোহে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম কেইতাকে ক্ষমতাচ্যূত করে মালির বিদ্রোহী সেনাবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী বাউবাউ কিসেকেও গ্রেপ্তার করে তারা। এরপর পশ্চিম আফ্রিকা রিজিওনাল ব্লক সেনা কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। সেখানে সেনাবাহিনী প্রস্তাব দেয়, তিন বছর পরে তারা শাসন ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। ততদিন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর কর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা দেশ শাসন করবে। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে ছেড়ে দেয়া হবে।
পশ্চিম আফ্রিকা রিজিওনাল ব্লকের প্রধান হলেন নাইজিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন। তারাই বিদ্রোহী সেনা নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার আলোচনা করেন। সেনার নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল আসিমি গইটা। মালিতে যাতে আবার অসামরিক সরকার ফেরে তার জন্যই চেষ্টা চলছিল। জনাথন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অনেকগুলি বিষয়ে একমত হয়েছি। কিন্তু অনেক বিষয়ে এখনো একমত হতে পারিনি। সকলেই চান, মালির উন্নয়ন হোক। কীভাবে সেটা করা যায়, তা নিয়েই আলোচনা চলছে’।
রবিবার নয় ঘণ্টা ধরে আলোচনা হয়েছে, আরও আলোচনা হবে। বিদ্রোহী সেনাদের মুখপাত্র কর্নেল ইসমায়েল ওয়াগু বলেছেন, ‘কিছু বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব হয়েছে। আলোচনা চলবে’। তবে কোন কোন বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে এবং কোন কোন বিষয়ে হয়নি তা তারা জানাননি।
সূত্র উদ্ধৃত করে স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, আটক প্রেসিডেন্ট কেইতা ও ক্ষমতার হস্তান্তরই আলোচনার মূল বিষয় ছিল। কীভাবে তা হতে পারে, তা নিয়েই দীর্ঘ আলোচনা চলছে।
সংবাদসংস্থা এএফপি সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বিদ্রোহী সেনা কর্তাদের প্রস্তাব, সামরিক থেকে অসামরিক শাসনে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলবে তিন বছর ধরে। এই প্রক্রিয়া তদারক করবে সেনার একটি সংস্থা। তারাই দেশ চালাবে। একজন সেনা কর্তা প্রেসিডেন্ট হবেন। আর সরকারে মূলত সেনা পদাধিকারীরা থাকবেন।
ফরাসি রেডিও আরএফআই জানিয়েছে, বিদ্রোহী সেনারা প্রেসিডেন্ট কেইতাকে মুক্তি দিতে রাজি। কেইতা যদি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান, তা হলেও তাদের কোনো আপত্তি নেই। গত আট বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মালিতে সেনা বিদ্রোহ হলো।
Leave a Reply