ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ২১ ডিসেম্বের ২০২৪ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): বৃহস্পতিবার গাজা শহরের দার আল-আরকাম এবং শাবান আল-রায়েস স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়
গাজা ভূখণ্ডে জাতিগত নির্মূলের সুস্পষ্ট লক্ষণ রয়েছে- এমন প্রতিবেদনের মধ্যে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৫ জনকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল জাজিরার।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস, ফরাসি আদ্যক্ষর অনুযায়ী যা এমএসএফ নামে পরিচিত, এর ‘গাজা ডেথ ট্র্যাপ’ শিরোনামের একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা ‘জাতিগত নির্মূলের সুস্পষ্ট লক্ষণ’ রয়েছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসেরর সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিস্টোফার লকইয়ার আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা ‘নির্বিচারে বেসামরিকদের হত্যা’ পরিচালিত হচ্ছে।
“আমরা অবকাঠামো ভেঙে যেতে দেখেছি, যা চিকিৎসা অবকাঠামোসহ জীবনের জন্য অপরিহার্য এবং আমরা মানবিক সহায়তার ওপর একটি শ্বাসরোধ দেখেছি,” লকইয়ার বলেছেন।
তিনি বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে আমরা গাজার উত্তরে যা দেখেছি তা বিশেষভাবে তীব্র। আমরা গাজাবাসীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা, আটকে পড়া এবং বোমাবর্ষণ করতে দেখেছি। গাজার উত্তরে যা ঘটছে সেটা জাতিগত নির্মূলের একটি সুস্পষ্ট লক্ষণ।”
“আমরা যা বলছি তা হলো, ক্রমবর্ধমান সংখ্যক আইন বিশেষজ্ঞ এবং আইনি সংস্থা রয়েছে যারা গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালানোর উপাদানগুলি দেখছে এবং আমাদের দল, আমাদের মেডিকেল টিম… আমাদের পর্যবেক্ষণগুলো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ’ মূল্যায়ন, তিনি যোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি দেখছি, উত্তরে জাতিগত নিধন, অবকাঠামো ধ্বংস, গাজার জনসংখ্যার শারীরিক ও মানসিক আঘাত, এবং এই সবই অনস্বীকার্য।”
গণহত্যার এমন প্রতিবেদনের মধ্যেই গাজা শহরে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত দুটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যারা যুদ্ধের কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
বুধ ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে গাজায় ২৪ ঘণ্টা ব্যাপক ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ২৪ ঘণ্টায় চারটি পরিবারে গণহত্যা চালিয়ে ৩২ জনকে হত্যা করেছে এবং ৯৪ জন আহত করেছে।
“অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছে কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না,” যোগ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজায় আল জাজিরার সংবাদদাতা বলেছেন, ছিটমহলের পানির অবকাঠামোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার পর ইসরায়েল ‘পানির ঘাটতি’কে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
এদিকে ইয়েমেনে ইসরায়েলের সর্বশেষ বোমা হামলার পর একজন হুথি মুখপাত্র বলেছেন যে গোষ্ঠীর যোদ্ধারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৪৫ হাজার ১২৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ সাত হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় ইসরায়েলে কমপক্ষে ১১৩৯ জন নিহত হয়েছিল এবং ২০০ জনেরও বেশি বন্দি করা হয়েছিল।
Leave a Reply